কিছু কিছু ফুল আছে, যার সাথে আমাদের শৈশব কৈশোর জড়িয়ে রয়েছে। খুব ভোরে শিশির ভেজা ঘাসের উপর পড়ে থাকা শিউলি ফুল কুড়ানোর সময়টা কি মনে পড়ে? শিউলি আমাদের একান্ত নিজস্ব গাছ। দক্ষিণ এশিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব থাইল্যান্ড থেকে পশ্চিমে বাংলাদেশ, ভারত, উত্তরে নেপাল ও পূর্বে পাকিস্তান পর্যন্ত এলাকা জুড়ে শিউলি গাছের দেখা পাওয়া যায়। পশ্চিমবঙ্গের ও থাইল্যান্ডের কাঞ্চনাবুরি প্রদেশের রাষ্ট্রীয় ফুল শিউলি।

শিউলি বা শেফালি ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম Nyctanthes arbor-tristis; লাতিন Nyctanthes এর অর্থ হচ্ছে “সন্ধ্যায় ফোটা” এবং arbor-tristis এর মানে হচ্ছে “বিষণ্ন গাছ”। শিউলি ফুল সন্ধ্যায় ফোটে আর সকালে সূর্য উঠবার আগেই ঝরে যায়। ধারণা করা হয় সন্ধ্যায় ফোটা আর সকালে ঝরা ফুলের মাঝে বিষণ্নভাবে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য শিউলি ফুলের এরকম নামকরণ হয়েছে। শিউলিকে কখনও কখনও “tree of sorrow” বা “বিষণ্ন তরু”-ও বলা হয়।

কী হয় শিউলির পাতা খেলে? চলুন এর কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিই-

 

কাশি কমায়-

শিউলি পাতার স্বাদ খুবই তিতকুটে হয়ে থাকে। এ পাতার রস সেবনে কাশির সমস্যা কমে।

 

বাতের ব্যথা সারায়-

অনেকেরই বাতের ব্যথা রয়েছে। তারা প্রতিদিন সকালে এক কাপ পানিতে দুটি শিউলি পাতা ও দুটি তুলসি পাতা ফুটিয়ে ছেঁকে পান করতে পারেন। এতে উপকার মিলবে।

 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে-

গবেষণা অনুযায়ী, রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে কাজ করে শিউলি পাতার রস। এই পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটারি উপাদান। এই দুটি উপাদান রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

 

ঠান্ডাজনিত সমস্যা কমায়-

ঠান্ডাজনিত সমস্যায় ভুগলে খেতে পারেন শিউলি পাতার রস। নিয়মিত ২ চামচ পরিমাণ পাতার রস হালকা গরম খেলে এই সমস্যায় উপকার পাবেন।

 

কৃমির সমস্যা দূর করে-

কৃমির সমস্যা সমাধানে দারুণ কাজ করে শিউলি পাতা। এছাড়া এই গাছের ছাল চূর্ণ করে সকালে ও বিকালে গরম পানিতে মিশিয়ে খেলে দেহের বাড়তি মেদও কমে।

 

শিউলিপ্রেমী হলেও, এর পাতার উপকারিতা সম্পর্কে হয়তো তেমন জানা ছিল না আপনার। এখন থেকে তবে উপকারী এই পাতা কাজে লাগান।

 

 

 

Facebook Comments


No comments so far.

Leave a Reply