কাটা জলপাইয়ের আচার
আচার / April 15, 2019 / zahidulislamjunnunজলপাই
জলপাই একটি গ্রীষ্মকালীন ফল । জলপাই গাছ মাঝারি আকারের হয়ে থাকে , এটি ১০ থেকে ১২ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে । শীতকালে পাতা ঝরে পড়ে , ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে নতুন পাতা আসে । সেই সঙ্গে আসে ছোট ছোট সাদা ফুল । একটি ফলের ওজন ১৫.৭৮ থেকে ২২.৪৬ গ্রাম , , দৈর্ঘ্য ৪.০৭ থেকে ৪.৪৯ সে:মি: , ব্যাস ২.৬২ থেকে ২.৮৯ সে:মি: হয়ে থাকে । ফলের রং হয় গাঢ় সবুজ , একটি বীজ থাকে ফলের মধ্যখানে , বীজের চারপাশ ঘিরে থাকে টক-মিষ্টি স্বাদের শাঁস।
উৎপাদন
জলপাই প্রথম উৎপাদিত হয় ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এবং এই সব অঞ্চলেই এই ফলের চাষ শুরু হয় । বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় জলপাইয়ের চাষ হচ্ছে ও অধিক পরিমানে চাষ করা হচ্ছে ।
চাষ প্রক্রিয়া
জলপাই চাষের জন্য বন্যার পানি জমে না এমন উঁচু বা মাঝারী উঁচু জমি নির্বাচন করে আগাছা পরিষ্কার করে চারা রোপন করতে হয় । মে-অক্টোবর মাস চারা রোপণের উপযুক্ত সময় । তবে পানি সেচের সুব্যবস্থা থাকলে সারা বছরই চারা রোপণ করা যেতে পারে। কলম রোপণের অন্তত ১৫-২০ দিন পূর্বে সোয়া ২৩ ফুট × সোয়া ২৩ ফুট দূরত্বে সোয়া তিন ফুট × সোয়া ৩ ফুট × সোয়া ৩ ফুট আকারের গর্ত করে উন্মুক্ত অবস্থায় রাখতে হবে । কলম রোপণের ১০-১৫ দিন পূর্বে গর্ত প্রতি ১৫-২০ কেজি পচা গোবর , ৩০০-৪০০ গ্রাম টিএসপি , ২৫০-৩০০ গ্রাম পটাশ , ২০০ গ্রাম জিপসাম ও ৫ ০ গ্রাম দস্তা সার গর্তের মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে গর্ত বন্ধ করে রেখে দিতে হবে । মাটিতে রসের ঘাটতি থাকলে পানি সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। গর্ত ভর্তির ১০-১৫ দিন পর নির্বাচিত চারাটি গর্তের ঠিক মাঝখানে এমনভাবে বসাতে হবে , যেন চারার গোড়া ঠিক খাড়া থাকে এবং কোনভাবে আঘাত পাবার সম্ভাবনা না থাকে । চারা রোপণের পরপর পানি দিতে হবে এবং খুটিঁ ও বেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে । তারপর ১-২ দিন পর পর পানি দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
জলপাইয়ের পুষ্টিগুণ
জলপাই হচ্ছে টক জাতীয় একটি ছোট ফল। এর খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ। এই আঁশ নিয়মিত খাবার হজমে সাহায্য করে । পাশাপাশি পাকস্থলী , ক্ষুদ্রান্ত , বৃহদান্ত , কোলনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এই ফল । শুধু ফল হিসেবে নয় , এর তেলও খুব স্বাস্থ্যকর । কাঁচা জলপাইয়ে রয়েছে বেশি পুষ্টি । এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক জলপাইয়ের কিছু গুণাগুণ-
হৃদযন্ত্রের যত্নে জলপাই যখন কোনো মানুষের রক্তে ফ্রির্যা ডিকেল অক্সিডাইজড কোলেস্টোরেলের মাত্রা বেড়ে যায় তখন হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেশি থাকে। জলপাইয়ের তেল হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায় । জলপাইয়ের এ্যান্টি অক্সিডেন্ট রক্তের কোলেস্টেরেলের কমায়। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায় ।
২. ক্যান্সার প্রতিরোধে জলপাই কালো জলপাই ভিটামিন ই এর বড় উৎস । যা কিনা ফ্রির্যাডিকেলকে ধ্বংস করে । ফলে শরীরের অস্বাভাবিক ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে । শুধু তাই নয় , জলপাইতে রয়েছে মনোস্যাটুরেটেড ফ্যাট । জলপাইয়ের ভিটামিন ই কোষের অস্বাভাবিক গঠনে বাধা দেয় । ফলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমে ।
৩. ত্বক ও চুলের যত্নে জলপাই কালো জলপাইয়ের তেলে রয়েছে ফ্যাটি এসিড ও এ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা কিনা ত্বক ও চুলের যত্নে কাজ করে । জলপাইয়ের তেল চুলের গোড়ায় লাগালে চুলের গোড়া মজবুত হয় । এতে চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা দূর হয় । জলপাইয়ের ভিটামিন ই ত্বকে মসৃনতা আনে । এছাড়া ত্বকের ক্যানসারের হাত থেকেও বাঁচায় জলপাই । সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির কারণে ত্বকের যে ক্ষতি হয় তাও রোধ ক রে জলপাই ।
৪. হাড়ের ক্ষয়রোধ করে জলপাই এর মনোস্যাটুরেটেড ফ্যাটে থাকে এন্টি ইনফ্লামেটরি । রয়েছে ভিটামিন ই ও পলিফেনাল । যা কিনা অ্যাজমা ও বাত-ব্যাথা জনিত রোগের হাত থেকে বাঁচায় । বয়সজনিত কারণে অনেকেরই হাড়ের ক্ষয় হয় । এই হাড়ের ক্ষয়রোধ করে জলপাইয়ের তেল ।
৫. পরিপাকক্রিয়ায় সাহায্য করে জলপাই নিয়মিত জলপাই খেলে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে । খাবার পরিপাকক্রিয়ায় সাহায্য করে জলপাই । শুধু তাই নয় , গ্যাস্ট্রিক ও আলসারে হাত থেকেও বাঁচায় জলপাই । জলপাইয়ের তেলে প্রচুর পরিমানে ফাইবার থাকে । যা বিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে ।
৬. আয়রনের বড় উৎস জলপাই কালো জলপাই আয়রনের বড় উৎস । রক্তের লোহিত কনিকা অক্সিজেন পরিবহন করে । কিন্তু শরীরে আয়রনের অভাব হলে শরীরে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয় । ফলে শরীর হয়ে পড়ে দূর্বল । আয়রন শরীরের অ্যানজাইমকে চাঙ্গা রাখে ।
৭. চোখের যত্নে জলপাই: জলপাইয়ে ভিটামিন এ পাওয়া যায় । ভিটামিন এ চোখের জন্য ভালো । যাদের চোখ আলো ও অন্ধকারে সংবেদনশীল তাদের জন্য ঔষধের কাজ করে জলপাই । এছাড়াও জীবাণুর আক্রমণ , চোখ ওঠা , চোখের পাতায় ইনফেকশনজনিত সমস্যাগুলো দূর করে এই জলপাই ।
৮. বিভিন্ন রোগ দূর করে জলপাই সংক্রামক ও ছোঁয়াচে রোগগুলোকে রাখে অনেক দূরে । নিয়মিত জলপাই খেলে পিত্তথলির পিত্তরসের কাজ করতে সুবিধা হয় । পরিণামে পিত্তথলিতে পাথরের প্রবণতা কমে যায় । এই তেলে চর্বি বা কোলেস্টেরল থাকে না । তাই ওজন কমাতে কার্যকর । যেকোনো কাটা-ছেঁড়া , যা ভালো করতে অবদান রাখে । জ্বর , হাঁচি-কাশি , সর্দি ভালো করার জন্য জলপাই খুবই উপকারী।
৯.রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় জলপাই জলপাইয়ে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে , যা দেহের ক্যান্সারের জীবাণুকে ধ্বংস করে এবং রোগ প্রতিরোধ শক্তিকে বাড়ায় দ্বিগুণ পরিমাণে ।
জলপাইয়ের উপকারিতা
জলপাই শুধু খেতেই সুস্বাদু নয় । নিয়মিত জলপাই খেলে পেতে পারেন এমন সব উপকারিতা যেগুলো প্রতিটি স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ চায় । চলুন , দেখে নেয়া যাক জলপাইয়ের এমন কিছু উপকারিতার কথা-
১. ক্যান্সার প্রতিরোধে কালো জলপাই ভিটামিনেরই ভালো উৎস । জলপাইতে আছে মনোস্যাটুরেটেড ফ্যাট । জলপাইয়ের ভিটামিন ই কোষের অস্বাভাবিক গঠনে বাধা দেয় । ফলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমে ।
২. হৃদযন্ত্রের উপকারিতা যখন মানুষের হৃদপিণ্ডের রক্তনালীতে চর্বি জমে , তখন হার্টএ্যটাক করার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে । জলপাইয়ের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হার্ট ব্লক হতে বাধা দেয় । জলপাইয়ে রয়েছে মোনো-স্যাচুরেটেড ফ্যাট , যা আমাদের হার্টের জন্য খুবই উপকারী ।
৩. ওজন কমাতে যখন জলপাইয়ের মোনো-স্যাচুরেটেড ফ্যাট অন্য খাবারে বিদ্যমান স্যাচুরেটেড ফ্যাটের বদলে গ্রহণ করা হয় তখন তা দেহের ভেতরের ফ্যাট সেলকে ভাঙতে সাহায্য করে । জলপাইয়ের তেলেও রয়েছে লো কোলেস্টেরল যা ওজন এবং ব্লাডপ্রেশার কমাতে সহায়ক ।
৪. আয়রনের উৎস জলপাই বিশেষ করে কালো জলপাই আয়রনের উৎস , আয়রন আমাদের দেহে রক্ত চলাচল করাতে সহায়তা করে , আর প্রাকৃতিক আয়রনের উৎসের জন্য জলপাই-ই সেরা।
৫. অ্যালার্জি প্রতিরোধে গবেষণায় দেখা গেছে , জলপাই অ্যালার্জি প্রতিরোধে সহায়তা করে । জলপাইয়ে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা ত্বকের ইনফেকশন ও অন্যান্য ক্ষত সারাতে কার্যকরী ভুমিকা রাখে।
৬. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে জলপাইয়ে যে খাদ্য আঁশ আছে তা মানুষের দেহের পরিপাক ক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং হজমে সহায়তা করে ।
৭. ত্বক ও চুলের যত্নে কালো জলপাইয়ের তেল আছে ফ্যাটি এসিড ও এ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা কিনা ত্বক ও চুলের যত্নে কাজ করে । জলপাইয়ের ভিটামিন ই ত্বকে মসৃনতা আনে । চুলের গঠনকে আরও মজবুত করে । ত্বকের ক্যানসারের হাত থেকেও বাঁচায় জলপাই । সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির কারণে ত্বকের যে ক্ষতি হয় তা রোধ করে জলপাই ।
৮. চোখের যত্নে জলপাইয়ে ভিটামিন এ পাওয়া যায় । ভিটামিন এ চোখের জন্য ভালো । যাদের চোখ আলো ও অন্ধকারে সংবেদনশীল তাদের জন্য ওষুধের কাজ করে জলপাই ।
সংগ্রহ
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাছাই করে সেরা মানের হৃষ্টপুষ্ট জলপাই গুলো সংগ্রহ করে আচার তৈরি করা হয় ।
আচারের উপাদান
জলপাইয়ের আচার তৈরি করতে যা যা লাগে-
টুকরো করে কাটা জলপাই , খাঁটি সরিষার তেল , পাঁচফোড়ন গুড়া ,গরম মশলা গুড়া , লবণ , চিনি , শুঁকনো মরিচ গুড়া , সিরকা ।
আচারের উপকারিতা
জলপাইয়ে রয়েছে বহুবিধ উপকারিতা । খাবার কিংবা ঔষধ দুভাবেই জলপাইকে চালিয়ে দেয়া যায়। সম্প্রতি একদল গবেষক গবেষণা শেষে জলপাইয়ের সাত ধরণের উপকারিতার কথা বলেছেন। তাই হৃদরোগ , ক্যান্সার , চর্ম রোগ সারাতে জলপাইয়ের আচার খেতে পারেন ।
এই মজাদার ও পুস্টিগুন সমৃদ্ধ আচারটি পেতে কল করুন-
০১৭১১৩০৫৮৮৯ এই নাম্বারে ।
এবং ক্লিক করুন-
কাটা জলপাইয়ের আচার ২৫০ মি লি
কাটা জলপাইয়ের আচার ৫০০ মি লি
Categories
Products
-
3 Pickle Combo Mini Box
৳ 1,170.00Original price was: ৳ 1,170.00.৳ 999.00Current price is: ৳ 999.00. - টক ঝাল মিষ্টি আচার তেঁতুল, রসুন, আলুবোখারা ৳ 1,350.00
- কালোজিরার আচার ১কেজি ৳ 950.00
- আমলকির ক্যান্ডি ৪০০ গ্রাম ৳ 590.00
- আমলকির ক্যান্ডি টেস্টার প্যাক ( ১০০ গ্রাম) ৳ 150.00