শীত কালের জন্য কিছু জরুরি টিপস

শীতে আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাব আমাদের ত্বক, চুল ,হাত ও পায়ে পড়ে।  যার ফলাফল শুষ্ক ত্বক,রুক্ষ চুল,ফাটা ঠোঁট ইত্যাদি। এইসব সমস্যা দূর করা অনেক সময় সাপেক্ষ এবং ঝামেলার ও বটে । যার ফলে শহরের এই কর্মব্যস্ত জীবনে সৌন্দর্য ধরে রাখা টা অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। কি করে অল্প সময়ে ঝটপট এই সব সমস্যার সমাধান করা যায় সে বিষয়ে আলোচলনা করেছেন স্কিন স্পেসালিস্টগন।  তাই চলুন জেনে নিই কিছু টিপস।

 

 

ত্বকের যত্ন

  • শীতকালে মুখ ও শরীরে মরা চামড়া অনেক বেশী উঠতে দেখা যায়। এর থেকে মুক্তি পেতে স্ক্রাবিংকরে নিতে পারেন। বাজারে অনেক ধরনের স্ক্রাবার পাওয়া যায়। সপ্তাহে ২-৩ দিন স্ক্রাবিং করে নিন। বাসায় ও বানিয়ে নিতে পারেন স্ক্রাবার। এজন্য, চালের গুড়া, এক চিমটিহলুদ, কাঁচা দুধ, মধু মিশিয়ে বানিয়ে নিন স্ক্রাবার।
  • গোসলের সময় পানিতে মিশিয়ে নিতে পারেন এসেনশিয়াল অয়েল। এতে আপনার ত্বকে একটি ময়েশ্চারাইজারের স্তর তৈরি হয়।
  • শীতকালেরোদ কম থাকলেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে ভুলবেন না যেন। কারণ শীতের এই হালকা রোদও আপনার স্কিনের বারোটা বাজিয়ে দিয়ে পারবে। তাই বাইরে যাওয়ার আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগাবেন।
  • রাতে মোজা পরে ঘুমাতে যাবেন। এতে কিছুটা হলেও পা ফাটা থেকে মুক্তি মিলবে। শীতে পা ফেটে গেলে ভ্যাসলিন, অলিভ অয়েল মিক্স করে পায়ে লাগান।

 

চুলের যত্ন

  •   শীতকালে যে সমস্যায় সবাই বেশী ভোগে, তা হলো খুশকি। অনেকেরই অন্যান্য সিজনে খুশকি দেখা না গেলেও শীতে ঠিকই দেখা যায়। এজন্য শীত শুরু হওয়ার আগে থেকেই অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করা শুরু করে দিতে হবে। এছাড়া খুশকির জন্য হেয়ার প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
  • মেথিপাউডার, টক দই, মধু, লেবুর রস মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে মাথার ত্বকে লাগান। ৪০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ফেলুন।
  • সপ্তাহে ২দিন চুলে তেল ম্যাসাজ করুন। এ ক্ষেত্রে নারিকেল তেল, জলপাই তেল, বাদাম তেলএকসাথে মিশিয়ে একটু গরম করে নিন। এরপর মাথার ত্বকে এবং পুরো চুলে লাগিয়ে নিন। তেল চুলের ময়েশ্চার ধরে রাখে।
  • শীতে ঘন ঘনচুল শ্যাম্পু করা থেকে বিরত থাকুন। এতে চুল রুক্ষ হয়ে যায় এবং চুলের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হয়ে যায়।
  • শীতে গোসলে আমরা গরম পানি ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু মাথার ত্বকে সরাসরি গরম পানি ব্যবহার করাযাবে না।এতে চুলের গোড়া নরম হয়ে যায়। তাই মাথার ত্বকে হালকা গরম পানি ব্যবহার করবেন।
  • চুলশুকানোর জন্য হেয়ার ড্রাইয়ার ব্যবহার কম করাই ভালো। চুল নরমাল ভাবেই শুকাতে দিন।

ঠোটের যত্ন

  •  শীতকালে ঠোটের যত্নের কথা ভুললে চলবে না। শীতে ঠোট ফাটা একটি বড় সমস্যা। তাই শীত শুরুর আগে থেকেই প্রতি রাতে লিপবাম লাগিয়ে ঘুমাবেন।
  • এছাড়া একটি লিপবাম সমসময় সাথে রাখবেন। যখনই প্রয়োজন হবে তখনই যাতেব্যবহার করতে পারেন।
  • ঠোটের মরা চামড়া দূর করার জন্য সপ্তাহে ২-৩ বার লিপ স্ক্রাব করে নিবেন। এজন্য চিনি, মধু, লেবুর রসমিশিয়ে নিয়ে ঠোটে স্ক্রাব করে নিন।
  • এছাড়া রাতে ঘুমানোর আগে ঠোটে ঘি ঘষে নিতে পারেন। এতে ঠোট নরম হবে এবং ঠোটা ফাটা থেকে মুক্তি মিলবে।

হাত ও পায়ের যত্নে লেবু ও লবন গরম পানি:

  • সারাদিন রোদ ও ধুলো ময়লায় হাত ও পায়ের অবস্থা বেশ খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু খুব সহজেই দিন শেষে রাতের বেলা মাত্র ২০ মিনিট ব্যয় করে হাত ও পায়ে ফিরিয়ে আনতে পারেন হারিয়ে যাওয়া উজ্জলতা ও কোমলতা।
  • একটি তাজা লেবু কেটে হাত ও পায়ে ঘষে নিন। এরপর কুসুম গরম পানিতে লিটারে ১ চা চামচ লবন দিয়ে এতে হাত ও পা ডুবিয়ে রাখুন ১০-১৫ মিনিট। চাইলে পানিতে সামান্য শ্যাম্পুও দিতে পারেন।
  • এরপর একটি মাজুনি দিয়ে আলতো করে হাত ও পা ঘষে নিন।
  • এরপর হালকা কুসুম গরম পানিতে হাত পা ধুয়ে ও মুছে নিন।
  • এরপর হাতে ও পায়ে অলিভ অয়েল লাগিয়ে নিন। এটা করুন সপ্তাহে ২ দিন।

 

 শীতে আমাদের ত্বক খুব সহজেই রুক্ষ আর মলিন হয়ে পরে, তাই এই সময়ে শীতের যত্ন নেয়াটা অত্যন্ত দরকারি। শীতে ত্বকের যত্ন নেয়ার পাশা পাশি বেশি করে শাক-সব্জি খেতে হবে ।এবং বেশি করে পানি পান করতে হবে। এতে আপনার ত্বক থাকবে কোমল ও নমনীয়। 


Comments are closed.