আমাদের সকলেরই কম বেশি ধারণা রয়েছে ঘি খেলে নাকি মোটা হয়ে যায়৷ আবার অনেকেই মনে করেন বেশি ঘি খেলে নাকি হার্টের নানা সমস্যা হতে পারে৷ কিন্তু এই সব ধারণাকে ভুল বলছেন অনেক গবেষকই৷
তাঁরা বলছেন দিনে এক থেকে দুই চামচ ঘি খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো৷ কারণ ঘি খেলে শরীরে একাধিক উপকারী ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বাড়ে৷ ফলে কোন রোগই শরীরের ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না৷ শুধু তাই নয় শীতকালে নিয়মিত ঘি খেলে বারে বারে সর্দি, কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে৷ এছাড়াও নানা বিধ উপকার পাওয়া যায়৷ চলুন দেখে নেওয়া যাক ঘি এর উপকারিতা গুলি৷
নিয়মিত এক দুই চামচ ঘি খেলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়৷ গবেষকদের মতে ব্রেন পাওয়ারের উন্নতিতে ও নার্ভের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে ঘিয়ের বিকল্প কিছু হয় না৷ ঘিতে আছে ওমেগা ৬ ও ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড৷ যা আমাদের মস্তিষ্ককে চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে৷
ঘি দেহের তাপমাত্রাকে বাড়াতেও সাহায্য করে৷ গবেষণায় দেখা গিয়েছে নিয়মিত ঘি খেলে দেহের ভিতর কিছু পরিবর্তন দেখা যায়৷ যা আমাদের শরীরের তাপমাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে৷ তাই আর বেশি না ভেবে শীতকালে নিজেকে সুস্থ রাখতে রোজের খাদ্যাভ্যাসে ঘি যোগ করুন৷
হজমের ক্ষমতা বাড়াতে ঘি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷ ঘন ঘন বদ হজম বা গ্যাস অম্বল হচ্ছে৷ কিছু খেতে পারছেন না৷ এরকমটা হলে খাবারে রোজ ঘি যোগ করতে পারেন৷ বেশি তেল বা ঝাল মশলা জাতীয় খাবার খেলে হজমের সমস্যা বেশি হয়৷ সেই ক্ষেত্রে এই সব খাবারকে ঘি সহজেই হজম করিয়ে দেয়৷
নিয়মিত ঘি খেলে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না বলে মনে করা হয়৷ কারণ ঘিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে উপস্থিত ফ্রি রেডিকালদের ক্ষতি করার ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়। ফলে কোষের বিন্যাসে পরিবর্তন হয়ে ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়াতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়৷
এখন ডিজিটাল যুগে আমাদের সকলেই কম বেশি দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারে কাজ করতে হয়৷ ফলে চোখের নানা সমস্যা দেখা দেয়৷ নিয়মিত ঘি খেলে শরীরে ভিটামিন এ-এর ঘাটতি দূর হয়। ফলে দৃষ্টিশক্তি বাড়ে, ছানি পড়া থেকেও চোখকে সুস্থ রাখে৷
শীতকাল এলেই খুশকির সমস্যা যেন একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়৷ আপনি হয়তো ভাবছেন ঘিয়ের সঙ্গে খুশকির আবার কি যোগসূত্র৷ আরে না না ঘি খেলে খুশকি কমবে এমনটা নয়৷ তবে শীতকালে খুশকির হাত থেকে বাঁচতে নিয়মিত স্কাল্পে ঘি লাগিয়ে মাসাজ করুন৷ তারপর উষ্ণ গরম জলে তা ধুয়ে ফেলুন৷ এতে খুশকির সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন৷
বাচ্চারা অপুষ্টিতে ভুগছে৷ কিছুই ঠিকমতো খেতে চায় চাইছে না৷ এত চিন্তা কিসের ঘি আছে তো৷ খাবারের সঙ্গে নিয়মিত ঘি খাওয়ান বাচ্চাদের৷ এতে শরীরে ভিটামিন এ ও ই-এর ঘাটতি দূর হবে৷ তেমনি অ্যান্টিঅ্যাক্সিডেন্টের মাত্রাও বৃদ্ধি করবে৷ ফলে পুষ্টির ঘাটতি দূর হবে৷ পাশাপাশি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে৷
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ঘি অনবদ্য৷ আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের মতে ঘি হল প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার৷ যা আমাদের ত্বক ও ঠোঁটের হারিয়ে যাওয়া আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে৷ শুধু তাই নয় প্রতিদিন অল্প পরিমাণ ঘিয়ের সঙ্গে যদি সামান্য জল মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন৷ তাহলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে৷
ঘি শুধু ওজন বৃদ্ধি করে এই ধারণটা ভুল প্রমাণিত হল৷ তবে ওজন হ্রাস করতে ঘি খুবই উপকারী৷ ভাবছেন তো এটা আবার হয় নাকি৷ হ্যাঁ এটা সত্যি হয়৷ ঘিতে আছে অ্যাসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড৷ যা আমাদের শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ঝড়াতে সাহায্য করে৷ স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমতে শুরু করে৷ তাই আর কোনও কথা না শুনে বেশি না ভেবে নিয়মিত ঘি খাওয়া অভ্যাস করে ফেলুন৷ এছাড়াও ঘি এর উপকারিতা আরো অনেক রয়েছে।