সামান্য গরমেই হাঁপিয়ে উঠছেন। বোধ করছেন শারীরিক দুর্বলতা। মেজাজ যাচ্ছেতাই খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে। ঘুমে ব্যাঘাত ঘটছে। শরীরে পানিশূণ্যতা দেখা দিচ্ছে। কাজে কোনোমতেই মন বসছে না। তাই গরম থেকে একটু নিস্তার পেতে রিচ ফুড পরিহার করেই চলছেন। এবার  থামুন!  গরম একমদমই সহ্য না হলে কিছু খাবার খেলেই তো হয়। তাহলে আর দেরি কেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক গরম রোধে যে খাবারগুলো খেতে হবে-
দই
গরমের হাত থেকে বাঁচতে এটি একটি দারুণ খাবার। পুষ্টি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিতি দেশাই বলছেন,  গ্রীষ্মে একটি উত্তম খাদ্য হলো দই। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন বি ১২ ও ভিটামিন ডি। এটি খেলে শরীর যেমন ঠাণ্ডা থাকে, তেমনি দেহের পুষ্টি চাহিদাও পূরণ হয়। তাছাড়া এতে উপস্থিত প্রোবায়োটিক দীর্ঘমেয়াদি রোগ সারাতেও কাজ করে।
বরফ চা
গরম থেকে একটু বাঁচতে আমরা হরহামেশা ফ্রিজে রাখা কোমল পানীয় পান করে থাকি। কিন্তু এতে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। তাই এর বিকল্প হিসেবে বরফ চা খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বরফ চা তৈরি করাও খুব কঠিন নয়। একটি গ্লাসে গরম চা নেওয়ার পর তাতে সামান্য পরিমাণ বরফ, পুঁদিনা পাতা, লেবুর রস ও ফল কেটে মেশালেই তা প্রস্তুত হয়ে যায়।
মরিচ
গরমে এর কথা শুনলে যেকারোরই চমকে যাওয়ার কথা। তবে ক্লিনিক্যাল ডায়িটিসিয়ান জয়নব গুলাম হোসেন বলছেন, গরমে ঠাণ্ডা থাকতে চান, তাহলে মরিচ কামড়ান। মরিচে উপস্থিত ক্যাপসেইসিন শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে ঘামের সৃষ্টি করে। যা অতি গরমে ঠাণ্ডা হতে সহায়তা করে।
পেঁয়াজের রস
এটি সম্পর্কে অনেকেই অবগত নন। তবে তীব্র গরমের হাত থেকে রক্ষা পেতে একটি কার্যকরী উপাদান পেঁয়াজের রস। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পেঁয়াজের রসে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা গরমে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির হাত থেকে ত্বককে রক্ষা করে। বুকে পেঁয়াজের রস মালিশ করলে শরীরের তাপমাত্রা হ্রাস পায়। পোড়া ক্ষতের চিকিৎসায়ও এটি দারুণ কার্যকর। এমনকি এটি সালাদ হিসেবে খেলেও নানা উপকার পাওয়া যায়।
তরমুজ
গ্রীষ্মে খুবই পরিচিত একটি ফল তরমুজ। এর ৯০ শতাংশই পানি। ফলে এটি খেলে গরমে শরীর ঠাণ্ডা থাকে। এটি ইলেক্ট্রোলাইট এর বিশাল উৎস। যা হাইড্রেটেড থাকতে সহায়তা করে। শুধু তাই নয়,  ঘামের সাথে শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া খনিজ পূরণ করে ইলেক্ট্রোলাইট। এটি সালাদ হিসেবেও খাওয়া যায়।
নারিকেলের পানি
গ্রীষ্মে গরমের হাত থেকে রক্ষার অন্যতম উপায় হলো নারিকেলের পানি পান। এতে বিদ্যমান ইলেক্ট্রোলাইট শরীর ঠাণ্ডা রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক এনজাইম, খনিজ, লৌহ, সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস। এসব উপাদান শরীরের পুষ্টিচাহিদা পূরণ করে।
পানি
গরম প্রতিরোধে পানির কোনো বিকল্প নেই। এটি শরীরে শক্তি সরবরাহ করে। কিডনির কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পন্ন করে। পানিশূণ্যতা দূর করে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিনে অন্তত দুই লিটার পানি আমাদের পান করা উচিৎ।
তেঁতুল
মিষ্টি ও টক স্বাদের তেঁতুলও শরীর ঠাণ্ডা রাখতে সহায়তা করে। এটি শরীরের জন্য অপরিহার্য ভিটামিন যেমন থিয়ামিন, ভিটামিন সি ও এ, নিয়াসিন উপাদানে সমৃদ্ধ। যা গ্রীষ্মে শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে।

Comments are closed.