সকালবেলা তাড়াহুড়োর মধ্যে অনেকেরই নাস্তা খাওয়ার ইচ্ছা থাকে না। সময়মত কর্মস্থলে পৌঁছানোর তাগাদায় এক কাপ চা কিংবা কফি ছাড়া অনেকেই মুখে কিছু তুলতে পারেন না। তবে জোর করে হলেও সকালের নাস্তা খাওয়া উচিৎ।

নাস্তা খেতেই হবে

সকালের নাস্তাকে ইংরেজিতে বলে ‘ব্রেকফাস্ট’, যার অর্থ হলো সারা রাতের উপবাস ভাঙা। রাতের খাবার খাওয়ার পর আমরা অন্তত ৬-৮ ঘণ্টা কোনো কিছু না খেয়ে থাকি, একে উপবাসই বলা যায়।

পুষ্টিবিদরা বলছেন, প্রয়োজনে জোর করে কিছু খান, তাও সকালবেলা না খেয়ে থাকবেন না। কারণ সকাল থেকে শুরু হয় আমাদের কাজ। দুপুরের খাওয়ার আগ পর্যন্ত শরীরের কী পরিমাণ শক্তি ক্ষয় হয় ভেবে দেখেছেন? দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার পর এতোটা শক্তি খরচ করলে শরীরের ওপর বেশ ধকল যায়।

সকালে খাওয়ার উপকারিতা

শৈশব থেকেই সকালে ঠিকমতো নাস্তা খাওয়ার অভ্যাস আমাদের কাজে লাগে। গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে খেলে আমাদের মনোযোগ ভাল থাকে এবং ইন্দ্রিয়গুলো সজাগ থাকে, ফলে নতুন কিছু শেখা যায় ভালভাবে। দিনব্যাপী আমাদের শরীরে শক্তি ধরে রাখে এবং হজম ক্ষমতা ভাল রাখে, ফলে চর্বিযুক্ত ভাজাপোড়া খাবারের দিকে হাত বাড়াতে হয় না।

তাই স্বাভাবিকভাবেই আমাদের পেটে সবচেয়ে পুষ্টিকর খাবারটি পড়ে। সকালে ঠিকমতো নাস্তা করলে বাড়তি ওজন নিয়ে চিন্তা করতে হয় না, কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং দিন কাটে সুন্দরভাবে।

ঝটপট নাস্তার উপায়

ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরি হয়ে গেলেই হলো, নাস্তা খাওয়ার সময় আর পাওয়া যায় না। অনেক সময় ট্রাফিক জ্যামের ঝক্কি থেকে বাঁচতে সময়ের অনেক আগেই বেরিয়ে পড়তে হয়। এমন অবস্থায় শরীরকে ঠিক রাখতে কষ্ট করে ১০ মিনিট আগে উঠুন, অ্যালার্মটা সেভাবেই সেট করে নিন। তারপর শুধু ১০ মিনিট সময় দিন নাস্তা তৈরিতে, যা খেতে পারবেন পথে চলতে চলতেই। আসুন দেখে নেই এমন কিছু ঝটপট নাস্তার রেসিপি।

# সবজি আর ফল ছুটির দিনে কেটে ফ্রিজে রেখে দিন, অফিসে যাওয়ার আগে শুধু ব্লেন্ডারে দিয়ে ব্লেন্ড করে নিলেই হল। পানি খাওয়ার বোতলে ভরে নিয়ে যান সঙ্গে করে, চলতে চলতে খেয়ে নিন।

# সেদ্ধ ডিম এবং হোলগ্রেইন রুটির টোস্ট- একসঙ্গে অনেকগুলো ডিম সেদ্ধ করে ফ্রিজে রেখে দিন। সকালবেলা শুধু রুটি টোস্ট করে নিন। ডিমের সঙ্গে হালকা গোলমরিচের গুঁড়ো দিয়ে নিলেই খেতে হবে দারুণ। ডিমকে বলা হয় প্রোটিনের খনি, চেষ্টা করুন সপ্তাহে ৩/৪ টি ডিম খেতে।

# তাজা ফল এবং দই—সবচেয়ে সহজ নাস্তা। চেষ্টা করুন চিনি ছাড়া দই খেতে, ফলের প্রাকৃতিক মিষ্টির স্বাদ নিন।

# পরিজের সঙ্গে দই এবং ফল কুচি করে খেতে পারেন।

# হোলগ্রেইন টোস্টের মধ্যে অ্যাভোকাডো লাগিয়ে তাতে টমেটো, ডিম, মাশরুম এবং পনির কুচি দিয়ে বানিয়ে ফেলুন মজাদার স্যান্ডউইচ।

# রুটি বা চাপাতি চুলায় সেঁকে তাতে আগের দিনের তরকারি কিংবা ভাজি দিয়ে রোল করে খেয়ে নিন, সঙ্গে শসা, টমেটো বা ক্যাপসিকাম কুচি এবং চাটনি দিলে আরও ভাল।


No comments so far.

Leave a Reply